শৈশবে ভাষা শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ইংরেজি বাংলা পত্রিকার কলামগুলো অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়তাম। না বুঝলে গিয়ে দাদার কাছে ঘ্যান ঘ্যান প্যান প্যান করতাম এগুলোর মানে কি? পরবর্তীকালে আগ্রহ হারিয়ে ফেললেও পড়া বাদ দেইনি। গুণী বুদ্ধিজীবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত মানুষগুলোর বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্য দেখে অবাক বিস্ময়ে তখন এই কলামগুলোকে ফান পোস্ট বিবেচনা করে পড়তাম। মূল কথা ইচ্ছে অনিচ্ছেয় অন্তত পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় দিনে একবার নজর দিতাম। বলাই বাহুল্য শিক্ষক হওয়ার আগে ঐ পাতাতেই আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছিল বছর খানেকের জন্য।
একটা পর্যায়ে তাদের মেধাশূন্যতার পাশাপাশি আক্কেলদাঁতবিহীন মোসাহেবিতে এই মজা করার প্রবণতাটা সুতীব্র বিরক্তি আর ঘৃণায় রূপ নেয়। বলতে গেলে তখন থেকে প্রায় সবরকম বাংলা ইংরেজি পত্রিকার কলাম লেখা এবং পড়া বাদ দিয়ে দেই। করোনা সংক্রমণের পর থেকে বিষয়টা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণা করেছে। সবাই যার যার অবস্থান থেকে বিশেষজ্ঞ সাজছে। বাংলার অধ্যাপকের কি প্রয়োজন করোনা নিয়ে জ্ঞান দেয়ার? উনি বরং চাইলে সাহিত্যে মহামারী নিয়ে এসেছে সেটা বর্ণনা করতে পারেন। যেমন, আমি গত কয়েকদিনে পড়ছি স্প্যানিশ ফ্লু থেকে শুরু করে যে মহামারীগুলো বিশ্ব নাড়িয়ে দিয়েছিল তার ব্যাপারে।
একবার ভেবে দেখেন একজন মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক মানুষকে শিক্ষা দিচ্ছে ইতিহাস এবং প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে। একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক তিনি নিজের গবেষণা বাদ্দিনে জাতিকে প্রতিনিয়ত নসিহত করছেন আজগুবি সব তথ্য দিয়ে। একজন ইতিহাসের অধ্যাপক সব জানেন, তিনি শিশু কিশোরদের বিজ্ঞান শেখাচ্ছেন। একজন উচ্চ পদস্থ আমলা অবসর যাপনের উচ্ছিষ্ট সময়ে চায়ের কাপ একপাশে সরিয়ে ১২০০ শব্দের একটা নিবন্ধ লিখে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাঙ্গিয়া কিংবা নরেন্দ্র মোদীর কাছা ধরে টান দিচ্ছেন। ভাবা যায় !!
বুদ্ধিবৃত্তির ফেরিওয়ালারা মূলত মোটা দাগে দুই ভাগে বিভক্ত। তাদের আমরা কমবেশি বাংলাদেশের চৈনিক এবং রাশিয়ান দালালহিসেবে চিনি। ব্যক্তিজীবনে এই জিনিসগুলো কত নিকৃষ্ট মনোবৃত্তির সেদিকে দৃষ্টি দিন, তাতে এই দুটো বদমাশ রাষ্ট্র সম্পর্কে আপনাদের ধারণা স্পষ্ট হবে। তখন আপনিও আনন্দের সঙ্গে বলবেন বিশ্বমোড়ল হিসেবে পুঁজিবাদী আমেরিকা অন্তত সমাজতন্ত্রের নামে হিংস্র শ্বাপদ চীন-রাশিয়া থেকে শত সহস্রগুণ ভালো। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এখান থেকে কিছু কথিত স্কলারের সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে পালে পালে দোপেয়ে লেজবিহীন ছাগল রাশিয়ার পানে ছুটেছিল। এই ছাগলগুলোর অনেকের অনার্স কিংবা মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত পাবেন না। তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো গবেষণা প্রবন্ধ হারিকেন ধরিয়ে পাবেন না। শুধুমাত্র মার্ক্সবাদ ও ধর্মবিদ্বেষ পুঁজি করে এই জানোয়ারের দল বুদ্ধিজীবী সেজে সমাজের কাঁধে চড়ে বসে আছে।
গর্দভের দলের গবেষণা বলতে রাশিয়ায় গিয়ে কয়েকবছর আলুর ক্ষেতে কাজ করার বাইরে কিছু বলার ক্ষমতা নাই। কিন্তু বাংলাদেশে এমন ভাব ধরে যে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, এমআইটি, হার্ভার্ড কিংবা ইয়েল সব ওদের আঙ্গুলের ইশারায় চলে। কিন্তু বাস্তবে গুণতে গেলে তাদের আঙ্গুল আপনি সবসময় একটা কম দেখবেন। এই আঙ্গুলটা তারা অন্যের গুহ্যদ্বারে ঢুকিয়ে বসে থাকে। তারপর সময় সুযোগ মতো আঙ্গুলটা বের করে দুর্গন্ধ ছড়ায়। অনেকে আবার ঐ দুর্গন্ধ শুঁকে পুলকিত হয়, বলে বাহ চমৎকার।
রাশিয়ায় গিয়ে আলুতোলা ডিগ্রিধারী বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একপাল চৈনিক দালাল। এই দালালেরা শুধুমাত্র নিজেদের ধান্দা মেটাতে চীনের মতো ঠাণ্ডা মাথার খুনী একটা রাষ্ট্রের দালালি করে যাচ্ছে। যেই চীন বিশ্ব অর্থনীতির উপর দখল নিতে ভাইরাস ছড়িয়ে লাখো মানুষকে ভোগোচ্ছে, সরকারি হিসেবে প্রায় হাজার চল্লিশেক মানুষকে হত্যা করেছে তাদের দালালি করছে। জনৈক বেকুব মুফতি ইব্রাহিম এই ভাইরাসকে বলেছিল চীনের প্রতি গজব। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এইসব চৈনিক দালালেরা মানব সভ্যতার জন্য গজব।
মুফতি ইব্রাহিম একজন বর্ষীয়ান মানুষ। উনি ইন্টারনেট কিংবা ই-বুক সম্পর্কে ধারণা না রেখে সোজাসাপ্টা এন্টার্কোটিক মহাদেশের মালিক। উনার কথা বাদ দেন, নিজের কথা ভাবুন। আপনারা যারা সব জানার পরেও ঠাণ্ডা মাথার খুনী চীন সরকারের পাশাপাশি পুঁজিবাদী শুয়োর জ্যাক মার দালালি করছেন তাদের বুদ্ধিবৃত্তি কোন পশুর লেভেলে সেটা ভেবে দেখেছেন? আমার তো মনে হয় আপনারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন আর নাই করেন আল্লাহ আপনাদের দয়া করে অনেক কিছু দিয়েছেন, শুধু দয়া করে পেছন দিকে একটা লেজ আর মাথার উপর একটা শিং থেকেস বঞ্চিত করেছেন। এটা দিয়ে দিলে প্রাণি হিসেবে আপনারা পার্ফেক্ট হয়ে যেতেন।